আয়নিক স্রোত (দোয়েল নাগ )


নেককার নদীর ধারে ব্রিজের কাছাকাছি নরম ঘাসের গালিচা বিছানো এই জায়গাটা সোহমের বড়ো প্রিয়। মে-জুন মাসে তুবিঙ্গে শহরটা লিলি আর টিউলিপে সেজে ওঠে। ঠান্ডার তীব্রতা থাকে না। আবহাওয়াও বড়োই আরামদায়ক। এখানে এলেই সোহম যেন কোথায় হারিয়ে যায়। নেককারের জলে ব্ল্যাক হেডেড গাল, ইউরেশিয়ান হাঁসগুলো খেলা করে। ওদের দেখতে দেখতে সোহমের বহু পুরোনো দিনের স্মৃতির স্তরগুলো একটু একটু করে উন্মোচন হয়। গ্রামের পুকুরে পাতিহাঁসগুলোর ছানাপোনা নিয়ে হেলতে দুলতে সাঁতরে বেড়ানো, হারু, বলাই, সন্তুদের সঙ্গে ডুব সাঁতার, গাছে উঠে পেয়ারা চুরি, মাস্টারমশাইয়ের কানমলা, মায়ের গরাস করে ভাত খাইয়ে দেওয়া, সব প্রতিবিম্ব ভেসে ওঠে নেককার-এর জলে। সেই নদীয়ার প্রত্যন্ত গ্রামের সোহম কবে চলে এসেছে জার্মানির স্তুটগার্ট থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে ছোট্ট শহর তুবিঙ্গেতে একরাশ স্বপ্ন নিয়ে। ছোটো থেকেই পড়াশুনায় তুখোড়। বায়োটেকনোলজিতে এমএসসি করে টোয়েফল দিয়ে তুবিনগেন ইউনিভার্সিটিতে সুযোগ পায়। তারপর রিসার্চের মহা অধ্যায়ে পিএইচডি, পোস্ট ডক, পেরিয়ে গ্রুপ লিডার হতে হতে চোখের পলকে পার হয়ে যায় নয়-দশ বছর।

Scroll to Top